Pakistan Crisis: দাম বাড়বে সিগারেট-কোল্ড ড্রিংকসের, কমতে পারে সরকারি কর্মীদের বেতন! IMF-র ‘কঠিন শর্ত’ মানবে পাকিস্তান?
IMF: আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি অবধি সময় দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে, তারা যদি এই শর্তে সহমত হয়, তবেই চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।
ইসলামাবাদ: চরম আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে পাকিস্তান (Pakistan)। দেশের ভাঁড়ারে নেই বিদেশি মুদ্রা (Foreign Currency)। টাকাকড়ি না থাকায় দেশে চরম খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়েই ঋণের আশায় ঝুলি পাততে হয়েছে আন্তর্জাতিক মনিটারি ফান্ডের (International Monetary Fund) কাছে। চলতি সপ্তাহেই এক দফায় পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে আইএমএফের। এখনও বাকি আরও আলোচনা। এরই মধ্যে প্রথম দফার আলোচনাতেই আইএমএফ ঋণের জন্য পাকিস্তানকে যে যে শর্তগুলি পূরণ করতে বলেছে, তা শুনলে মাথা ঘুরে যাবে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ(Shahbaz Sharif)-ও জানিয়েছেন, লক্ষ কোটি টাকার ঋণ পাওয়ার জন্য আইএমএফ (IMF) যা যা শর্ত দিয়েছে, তা মানা অত্যন্ত কঠিন। তবে দেশের কাছে আর কোনও বিকল্প উপায়ও নেই। তবে কি সত্য়িই পাকিস্তান যাবতীয় শর্ত মেনে নেবে?
চরম আর্থিক অব্যবস্থা, আর্থিক নয়ছয়, পরিকল্পনাহীন ঋণ নেওয়া ও বিনিয়োগ, দুর্নীতি-একাধিক কারণ রয়েছে পাকিস্তানের দুর্দশার পিছনে। ঋণের দায়ে এতটাই ডুবে গিয়েছে প্রতিবেশী দেশ যে নতুন করে আর ঋণ দিতে রাজি নয় কোনও দেশ। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের একমাত্র ভরসা আন্তর্জাতিক মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ-ই। তবে ঋণ দেওয়ার আগেই আইএমএফ যা শর্ত রেখেছে, তা পূরণ করতে নাকানি-চোবানি খেতে হবে পাকিস্তানকে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী শর্ত রেখেছে আইএমএফ-
- ৯ বার পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি ও অর্থনীতি পর্যালোচনার পর আইএমএফ ১.১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। এই ঋণ পেলে অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকেও ঋণ চাইতে পারবে পাকিস্তান। তবে ঋণ দেওয়ার আগে আইএমএফ চায় পাকিস্তান যেন সরকারের আয় বাড়ায়। এরজন্য মাক্রো-অর্থনৈতিক কাঠামোও তৈরি করে দিয়েছে আইএমএফ। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি অবধি সময় দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে, তারা যদি এই শর্তে সহমত হয়, তবেই চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।
- পাকিস্তান সরকারের রাজস্বে বড় ঘাটতি রয়েছে। আইএমএফের প্রধান শর্তই হল আগে পাকিস্তানকে এই আর্থিক ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
- এর জন্য পেট্রোলিয়ামের দাম প্রতি লিটারে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানে পেট্রোলিয়ামের দাম প্রতি লিটারে ৫০ টাকা। আইএমএফের শর্ত মানলে তার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকায় পৌঁছবে।
- আইএমএফের তরফে পেট্রোলিয়াম, খনিজ তেল ও লুব্রিক্যান্টের উপরও ১৭ শতাংশ গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্য়াক্স বা জিএসটি বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই শর্তে রাজি না থাকলে, অর্ডিন্যান্স জারি করে সমস্ত পণ্যের উপরই ১ শতাংশ জিএসটি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
-
চিনি মিশ্রিত তরল পানীয়ের উপরও শুল্ক বাড়াতে পারে পাকিস্তান। মিনি বাজেট পেশ করে তরল পানীয়ের উপরে শুল্ক ১৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হতে পারে।
শুল্ক বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সিগারেটের উপরও।
সরকারি কর্মীদের সম্পত্তির পরিমাণ কত, তাও পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। পরে সরকারি কর্মীদের, বিশেষ করে যারা মোটা টাকা বেতন পান, তাদের বেতন কমানোর পরামর্শ দিতে পারে আইএমএফ।
এর আগেই খোলা বাজারে পাকিস্তানের ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ রেট কমাতে বলেছিল আইএমএফ। পরামর্শ মেনে রেট কমাতেই ব্যাপক পতন হয় পাকিস্তানি মুদ্রার দামেও।