Rahul Anand: পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের, তারাই ভেঙে গুড়িয়ে দিল ৩০০০ বাদ্যযন্ত্র! স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘরছাড়া রাহুল আনন্দ

Bangladesh Unrest: সোমবার রাতে ধানমন্ডিতে  রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। ঢুকতেই ভাঙচুর শুরু করা হয়। রাহুল আনন্দের বাড়িতে কমপক্ষে ১৫ হাজার বাদ্যযন্ত্র রাখা ছিল। সমস্ত কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।

Rahul Anand: পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের, তারাই ভেঙে গুড়িয়ে দিল ৩০০০ বাদ্যযন্ত্র! স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘরছাড়া রাহুল আনন্দ
ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁর সঙ্গে রাহুল আনন্দ ও পরিবার। পাশে জ্বলছে তাঁর বাড়ি।Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Aug 07, 2024 | 8:05 AM

ঢাকা: দাবি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা, সরকারের পতন। সেই দাবি পূরণও হয়েছে। কিন্তু অশান্তির আগুন কিছুতেই নিভছে না বাংলাদেশে। এবার আক্রমণের মুখে ওপার বাংলার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী রাহুল আনন্দ। ‘জলের গান’-র মুখ, রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ভেঙে ফেলা হয় প্রায় ৩ হাজার বাদ্যযন্ত্র। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘরছাড়া করা হয়েছে রাহুল আনন্দকে।

জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ধানমন্ডিতে  রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। ঢুকতেই ভাঙচুর শুরু করা হয়। রাহুল আনন্দের বাড়িতে কমপক্ষে ৩ হাজার বাদ্যযন্ত্র রাখা ছিল। সমস্ত কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। রাহুল আনন্দের এই বাড়িটি জলের গানের স্টুডিয়ো হিসাবেও ব্যবহার হত। ব্যান্ডের তরফে ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, সেই স্টুডিয়োও সম্পূর্ণ তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে রাহুল আনন্দ, তাঁর স্ত্রী ও ১৩ বছরের ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। সঙ্গে কিছু নিয়েও আসতে পারেননি তাঁরা। কার্যত এক কাপড়েই ঘরছাড়া করা হয় বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ও তাঁর পরিবারকে।

প্রসঙ্গত, গত বছরই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন, তিনি রাহুল আনন্দের বাড়িতে গিয়েছিলেন। প্রায় ২ ঘণ্টা ছিলেন রাহুলের বাড়িতে। প্রশংসা করেছিলেন তাঁর বানানো বাদ্যযন্ত্রের।

বরাবরই বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন রাহুল আনন্দ। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনেও সমর্থন জানিয়ে নিজের দলের সদস্যদের নিয়ে পথে নেমেছিলেন তিনি। আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানানোর পরও, তাদের রোষ থেকে রক্ষা পেলেন না সঙ্গীতশিল্পী ও তাঁর পরিবার।

ব্যান্ডের তরফে ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, “সকলের জন্য নিরন্তর ভেবে যাওয়া মানুষটিকে পরিবারসহ এক কাপড়ে তাঁর নিজ ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রভাব হয়তো আজীবন লালিত থাকবে তাঁর সন্তানের মনে; যার বয়স কি না মাত্র ১৩ বছর—ভাবতেই কষ্ট হয়। এত দিন ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন সংসারের সবকিছু দাউদাউ করে জ্বলেছে চোখের সামনে। কিছু মানুষের ক্রোধ এবং প্রতিহিংসার আগুনে! ”

সকলের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে ব্যান্ডটি লিখেছে, “এই বাদ্যযন্ত্র, গান বা সাজানো সংসার হয়তো আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে আবার গড়ে নিতে পারব। কিন্তু এই ক্রোধ আর প্রতিহিংসার আগুনকে নেভাব কীভাবে! কেন আমরা ভালবাসা আর প্রেম দিয়ে সবকিছু জয় করে নিতে পারি না? যেই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বাধীনতার রক্ষায় যদি একইভাবে এগিয়ে আসতে ব্যর্থ হই, তাহলে চরম নিরাশা, অপমান ও লজ্জায় নিজেদের গানই গেয়ে উঠি এক ভগ্ন হৃদয়ে, ‘কোন্ ছোবলে স্বপ্ন আমার হলো সাদা কালো? আমার বসত অন্ধকারে; তোরা থাকিস ভাল! সকল প্রাণ ভাল থাকুক। নতুন আগামীর স্বপ্নকে আমরাও অভিবাদন জানাই একইভাবে। কিন্তু নিজের উল্লাসের চিৎকার এবং সজোর হাততালিতে কারও স্বপ্ন ভেঙে না দিই!”