কিডনির সমস্যায় এখন অনেকেই ভুগছেন। কিডনিতে সমস্যা হলে অনেক রকম জটিলতা তৈরি হতে পারে। শরীরে ছাঁকনি প্রক্রিয়ার কাজ করে কিডনি। আর তাই কিডনি সুস্থ রাখা আমাদের কর্তব্য। এই ছাঁকনি প্রক্রিয়ার কারণেই কিডনিতে জমতে শুরু করে ক্যালশিয়াম, ফসফেট আর ইউরিক অ্যাসিড। স্বাভাবিক ভাবে তা মূত্রের সঙ্গেই বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা যদি বেরিয়ে না গিয়ে জমতে শুরু করে তাহলেই বুঝতে হবে কোনও সমস্যা হয়েছে।
কিডনি স্টোন প্রথমেই যে খুব বড় হয়ে যায় এমনটা নয়। দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে তা বড় হয়। প্রথমে খুব ছোট বালির সূক্ষ্ম কণার মতই থাকে তার আকার। ক্রমে সেখান থেকে বড় হতে থাকে। কিডনি স্টোনের প্রথম থেকেই বেশ কিছু লক্ষণ থাকে। কোমরে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা, কখনও পিঠের দিকে ব্যথা। অধিকাংশই তা উপেক্ষা করে যান।
একেবারে প্রথমদিকেই যদি ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা যায়। সামান্য ওষুধেই কাজ চলে যায়। প্রয়োজন পড়ে না অপারেশনেরও। এমনকী অবস্থাও খুব একটা জটিল হয় না। কিন্তু যত বেশি তা ফেলে রাখা হয়, ঝামেলা কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয়। কিডনিতে স্টোন হলে প্রথমেই কোমরের নীচের দিকে ব্যথা হয়। কখনও তলপেটের দিকে। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের জায়গায় ব্যথা এবং প্রস্রাব করতেও অসুবিধে হয়।
অনেকের ক্ষেত্রে বার বার ইউরিনে ইনফেকশনও কিডনি স্টোনের লক্ষণ। শরীরে যদি ফসফেট, ক্যালশিয়াম এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে তাহলে সেখান থেকেও হতে পারে এই সমস্যা। যাঁরা পরিমাণের তুলনায় কম জল খান তাঁদের কিডনিতে স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। তাই পেটে আর কোমরে ব্যথা হলে একবার ইউএসজি করিয়ে নিন। পরামর্শ নিন চিকিৎসকের।
কিডনির সমস্যা হলে ডায়েটেও নজর দিতে হবে। ফল খান। ফলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিডনির জন্য উপকারী। পেয়ারা, ন্যাশপাতি, জামরুল, ডাবের জল এসব নিয়মিত ভাবে খেতে পারলে ভাল। রোজের তালিকায় রাখুন দেশি সবজিও। পেঁপে, পটল, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, চিচিঙ্গে রাখতে পারলে খুব ভাল।
সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। স্যুপ, ফলের রসের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এছাড়াও ফ্যাট ছাড়া চিকেন খান। রেড মিট একেবারেই নয়। চলবে না ডিমের কুসুমও। ডিম পরিমাণে কম হলেই ভাল। নইলে সমস্যা বাড়বে।