Brain Stroke Recovery: ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ এক বছর, তারপরও দারুণ ফিট! প্রতিদিনের ডায়েট কেমন, অকপট স্বীকারোক্তি ‘আশিকি’ অভিনেতার
Rahul Roy Fitness: ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্ট তিনি জানিয়েছিলেন যে, তাঁর এই সুস্থতার পিছনে বড় হাত রয়েছে তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা রায়ের। অনেকেই প্রায়শই জিজ্ঞাসা করে যে ডায়েটে তিনি কী কী খাবার খান।
কোন রোগের জন্য কী কী খাবার খাওয়া দরকার তা এখনও ভারতীয়রা ঠিক করে বুঝে উঠতে পারল না। এমনকি বলিউডের অনেক তারকারও এ বিষয়ে সচেতন নয়। কারণ কেউ ঠেকায় না পরলে ঠেকে শেখে না। দৈনন্দিন জীবনধারার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে শরীর ফিট রাখার মূলমন্ত্র। কার্গিল শ্যুটিংয়ের সময় ব্রেইন স্ট্রোকে বলিউডের একসময়কার হার্টথ্রব রাহুল রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন গোটা একবছর। তবে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পেরেছেন শুধুমাত্র ভেষজ ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে। ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্ট তিনি জানিয়েছিলেন যে, তাঁর এই সুস্থতার পিছনে বড় হাত রয়েছে তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা রায়ের। অনেকেই প্রায়শই জিজ্ঞাসা করে যে ডায়েটে তিনি কী কী খাবার খান। আর সেই বিষয়ে অকপটে খোলসা করেছেন রাহুল রায়।
৫৬ বছর বয়সি এই অভিনেতা ইন্সটাগ্রামে তাঁর বোনকে ট্যাগ করে লিখেছেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় যাঁর অবদান অনস্বীকার্য। নিয়মিত তিনি যা যা খান তার কয়েক ঝলক শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
View this post on Instagram
জনপ্রিয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে আশিকি-খ্যাত অভিনেতা লিখেছেন, ”ব্রেন স্ট্রোকের পরে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। আমার বোন হরি মা আমার সবকিছু দেখাশোনা করে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার খাবার। দৈনন্দিন খাবার থাকে জৈব ও স্বাস্থ্যকর সবকিছু দিয়ে পূর্ণ। আমি হরি মাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ও আমাকে দ্বিতীয়বার জন্ম দেওয়ার জন্য। প্রতিদিন আমার যত্ন নেওয়ার জন্য।”
একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তাঁর প্লেটে সাজানো রয়েছে কুইনো, হর্সগ্রাম, অ্যাভোকাডো, লাল মরিচ, ব্রকলি, টমেটো, লাল বাধাকপির মতো খাবার। তিনি ইন্সটাতে লিখেছেন ” অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমি কী কী খাবার খাই। সব খাবারই অর্গ্যানিক ‘হরি মা’ আমাকে স্বাস্থ্যকর খাবারই দেন।”
View this post on Instagram
তবে এসবের মধ্যেও তিনি প্রায়ই নাকি ব্য়র্থ হতেন। ”প্রায়শই ভুল করে অস্বাস্থ্যকর খানা খেয়ে ফেলার ইচ্ছা থাকে। আমি লড়াই চালিয়ে যাই, তর্ক করি কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে সমসময়ই স্বাস্থ্যকর ও ভালো খাবার দেওয়া হয়। তাই সবাই সুস্থ থাকুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান।” এমনটাই এক ভিডিয়োতে অকপটে স্বীকার করেছেন রাহুল।
এর সঙ্গে আরও যোগ করে জানিয়েছেন, তিনি সাত্ত্বিক খাদ্য জীবনধারা অনুসরণ করেন। ”দুগ্ধজাত দ্রব্য-সহ আমিষ জাতীয় খাবার ত্যাগ করে দিব্য রয়েছেন। শুধু তাই নয় সিগারেট ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে জীবন যাপন করছি।”
View this post on Instagram
আরও একটি ইন্সটাগ্রাম পোস্টে তিনি শেয়ার করে বলেছেন,” আমি স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সিগারেট ত্যাগ করেছি, আমিষ খাবার ত্যাগ করেছি। ভাজাভুজি ও অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করেছি। চিনি গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছি। দুধ পান করা বন্ধ। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটার চেষ্টা করি। আমার বোনের কাছ থেকে নিজের ও আমাদের গ্রহের যত্ন নেওয়ার পাঠ শিখছি এখন।”
কোহিনূর হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডাঃ বিশ্বনাথন আইয়ারের মতে, উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া, ধূমপান, ডায়াবেটিস মেলিটাস, এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, অবৈধ ড্রাগ ব্যবহার, ভারী মদ্যপান, প্রচুর মদ্যপান, ধূমপান এবং অতিরিক্ত ওজন স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।” ফের স্বাভাবিক জীবনে শরীরকে ফিট রাখতে যোগব্যায়াম শুরু করা দরকার। আর সেই নিয়মকেই অভ্যাসে পরিণত করে আজকের ফলাফল দেখে পাচ্ছেন রাহুল রায়। আগে একটি পোস্টে অভিনেতা জানিয়েছিলেন, ”আমি আগে কখনও যোগব্যায়াম করতাম না। কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি, এটি শরীরের জন্য সেরা ওষুধগুলির মধ্যে একটি। আপনি যদি এখনই শুরু না করে থাকেন, তাহলে আজ থেকেই তা শুরু করে দিন।”
স্ট্রোকের রোগীদের কখনও আঠালো বা গিলতে অসুবিধা হবে, এমন খাবার কখনও দেওয়া উচিত নয়। “স্ট্রোক রোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অপরিহার্য হবে। এটি তাই কারণ ডায়েটটি পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সঠিকভাবে পরিচালনা করা প্রয়োজন। “স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি সীমাবদ্ধ করা অপরিহার্য। তাই পেস্ট্রি, মিষ্টি, পনির এবং মাখন খাবেন না।” পরামর্শ দিয়েছেন মুম্বইয়ের অ্যাপোলো স্পেকট্রা হাসপাতালের ডায়াটিশিয়ান ড. জিনাল প্যাটেল।
View this post on Instagram
সাত্ত্বিক জীবনধারা কি?
আয়ুর্বেদ অনুসারে হালকা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। এই জাতীয় খাবারগুলি শক্তি, সুখ, প্রশান্তি এবং মানসিক স্বচ্ছতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে পরিচিত। অনুশীলনে, এর অর্থ হল নিরামিষ, পুষ্টিকর, তাজা এবং সুস্বাদু জিনিস খাওয়া। এর মানে হল সাত্ত্বিক ডায়েটে পুষ্টিসমৃদ্ধ উদ্ভিদের খাবার বেশি এবং প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা খাবার কম। সাত্ত্বিক জীবনধারা অনুসরণ করা মানে আপনি যা খেতে পছন্দ করেন তা ছেড়ে দেওয়া নয়। স্বাস্থ্যকর খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য আপগ্রেড পদ্ধতি – এমন খাবার যা শুধু আপনার জিভ নয়, আপনার শরীরের বাকি অংশও পছন্দ করবে।
ড. প্যাটেলের পরামর্শ অনুযায়ী, ”স্ট্রোক থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য ফ্ল্যাক্সসিড, ব্লুবেরি, ডালিম খেতে পারেন। এইগুলিতে আলফা-লিনোলিক অ্যাসিড (ALA), অপরিহার্য ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মত বৈশিষ্ট্য। এছাড়া টমেটোতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপিন যা মস্তিষ্কের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে, বাদাম এবং বীজ ভিটামিন ই-তে ভরপুর, একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ভালো স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ভোকাডোতে অলিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা নিউরোপ্রোটেক্টিভ এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। দই এমনকি ডিমও খান। মটরশুটি ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা নিউরোমাসকুলার ফাংশনে সহায়তা করে।”
আরও পড়ুন: Summer Season: বাড়ছে গরমের তীব্রতা, এই সময় ‘কুল’ ও ‘ফিট’ থাকতে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলি মানতেই হবে