প্রস্তুতকারক সংস্থা নয়, কেন্দ্রের নয়া নিয়মে বেসরকারি হাসপাতালকে টিকার বরাত দিতে হবে ঘুরপথে
New Rule for Private Hospital's COVID Vaccination: টিকা নষ্ট আটকাতে ও সরবরাহে ভারসাম্য বজায় রাখতে অর্ডারের সর্বোচ্চ সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাতদিনে কত সংখ্যক টিকা দেওয়া হয়েছে, তা দ্বিগুণ করে বেসরকারি হাসপাতালে টিকা সরবরাহের সর্বোচ্চ সীমা স্থির করা হবে।
নয়া দিল্লি: সরাসরি প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে নয়, এ বার থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে করোনা ভ্যাকসিন কেনার জন্য কো-উইনের মাধ্যমেই অর্ডার দিতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতাল এক মাসে সর্বোচ্চ কত সংখ্যক ভ্যাকসিনের অর্ডার দিতে পারবে, তাও বেঁধে দিল সরকার।
মঙ্গলবার সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানানো হয়, আগামী ১ জুলাই থেকে ভ্যাকসিন কেনার নতুন নিয়ম চালু হবে। ১৮ উর্ধ্বদের টিকাকরণের শুরুর সময় কেন্দ্রের ঘোষণায় বলা হয়েছিল, এ বার থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলি সরাসরি টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকেই টিকা কিনতে পারবে। কিন্তু একাধিক হাসপাতালের অতিরিক্ত অর্ডারের ফলে সমস্ত রাজ্যে সমানভাবে টিকা বন্টন করা যাচ্ছিল না এবং ভ্যাকসিনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছিল। ২১ জুনের নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, উৎপাদিত টিকার মোট অংশের ২৫ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল কিনতে পারবে। তবে ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু সহ একাধিক রাজ্যের অভিযোগ, ২৫ শতাংশ বরাদ্দও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি।
টিকার আকাল দূর করতেই কেন্দ্রের তরফে নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টিকা কেনার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে তাদের যাবতীয় তথ্য কো-উইন পোর্টালে রেজিস্ট্রার করতে হবে। জেলা, রাজ্য ভিত্তিক সেই অর্ডার পৌঁছে যাবে টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে।
অন্যদিকে, টিকা নষ্ট আটকাতে ও সরবরাহে ভারসাম্য বজায় রাখতে অর্ডারের সর্বোচ্চ সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাতদিনে কত সংখ্যক টিকা দেওয়া হয়েছে, তা দ্বিগুণ করে বেসরকারি হাসপাতালে টিকা সরবরাহের সর্বোচ্চ সীমা স্থির করা হবে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছামতো মাসের যে কোনও একটি সপ্তাহ বেছে নিতে পারবে। অর্থাৎ যদি কোনও হাসপাতাল কোনও এক সপ্তাহে ৭০০ ডোজ় ভ্যাকসিন দেয়, তবে গড় হিসাবে প্রতিদিন ১০০ ডোজ় দেওয়া হয়েছে। ৩১ দিনের জন্য সেই ১০০ ডোজ়ের দ্বিগুণ অর্থাৎ সর্বাধিক ৬ হাজার ২০০ ডোজ় ভ্যাকসিনের অর্ডার দেওয়া যাবে।
একাধিক রাজ্যের তরফে বেসরকারি হাসপাতালে অধিক সংখ্যক ভ্যাকসিনের সরবরাহ হচ্ছে বলে দাবি করার পরই এই নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত সপ্তাহেই তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন কেন্দ্রকে জানিয়েছিলেন, বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ধার্য ২৫ শতাংশ টিকা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে তুলনামূলকভাবে কম ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডিও একই অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে, বেসরকারি হাসপাতালগুলি যে পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনছে, তার অধিকাংশই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে না। কেন্দ্রের তরফে প্রতিটি ভ্যাকসিনের জন্য যে নির্দিষ্ট চার্জ ঠিক করে দেওয়া হচ্ছিল, তাও মানা হচ্ছে না বলে তিনি জানান। যেখানে কোভিশিল্ডের জন্য ৭৮০ টাকা, স্পুটনিক ভি-র জন্য ১১৪৫ টাকা এবং কোভ্যাক্সিনের জন্য ১৪১০ টাকা ধার্য করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল প্রতি ডোজ়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা অবধিও নিয়েছে।