Delhi Fire: ‘স্ট্রেচারে করে শুধু দেহ বেরচ্ছে, কী আশা করব, জানি না’, বোনের অপেক্ষায় সারারাত পোড়া বাড়ির নীচেই দাঁড়িয়ে দাদা

Rescue Operation: বিল্ডিংয়ের একতলা থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। বিল্ডিংয়ে একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় দুর্ঘটনার সময়ে যাঁরা বিল্ডিংয়ের ভিতরে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা পালানোর কোনও পথ পাননি।

Delhi Fire: 'স্ট্রেচারে করে শুধু দেহ বেরচ্ছে, কী আশা করব, জানি না', বোনের অপেক্ষায় সারারাত পোড়া বাড়ির নীচেই দাঁড়িয়ে দাদা
পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে গোটা বিল্ডিংটি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 14, 2022 | 12:12 PM

নয়া দিল্লি: নাকে পোড়া গন্ধ আসছিল অনেকক্ষণ ধরেই। কিন্ত তেমন একটা পাত্তা দেননি কেউ। হুঁশ ফিরল আর্ত চিৎকারে। দরজা খুলতেই দেখলেন নীচে নামার সিঁড়িতে জ্বলছে আগুন। ধীরে ধীরে বাড়ছে আগুনের আঁচ। বুঝতে পেরেছিলেন আর পালাবার কোনও পথ নেই। অফিসের ভিতরেই ফেরত চলে এসেছিলেন। কিন্তু প্রাণ তো বাঁচাতে হবে। কোনও উপায় না পেয়েই বারান্দা থেকেই ঝাঁপ দিলেন তাই। দিল্লির অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পেয়ে এভাবেই নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন আহতরা। শুক্রবার পশ্চিম দিল্লির মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি বহুতলে আগুন লাগে। দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪০ থেকে ৫০ জন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল্ডিংয়ের একতলা থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। বিল্ডিংয়ে একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় দুর্ঘটনার সময়ে যাঁরা বিল্ডিংয়ের ভিতরে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা পালানোর কোনও পথ পাননি। অনেকেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেন। কেউ কেউ আবার দড়ি জোগাড় করে, দেওয়াল বেয়ে নামার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও নীচ থেকে তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। অগ্নিকাণ্ডে আহতদের গতকালই উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বিল্ডিংটির একতলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। সেখানে একটি সিসিটিভি ও ইন্টারনেট রাউটার তৈরির সংস্থার অফিস ছিল। আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা না গেলেও, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে যে মজুত সামগ্রী থেকে বা শর্ট সার্কিটের মাধ্যমেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়া বের হতে দেখেই প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ ও দমকলে খবর দেয়। এনডিআরএফের সহায়তায় প্রায় ৭ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এখনও অনেকজন নিখোঁজ বলেই জানা গিয়েছে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি যাঁরা, তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

অজয় দক্ষ বলে এক ব্যক্তি জানান, তাঁর বোন ওই বিল্ডিংয়েই কাজ করে। আগুন লাগার খবর পেয়েই তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা ধরে অগ্নিদ্বগ্ধ ওই বিল্ডিং ও স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে ছোটাছুটি করলেও, তাঁর বোনের কোনও খোঁজ পাননি। অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখেই তিনি ছুটে যাচ্ছিলেন। স্ট্রেচারে রাখা দেহগুলির মধ্যে যদি নিজের বোনের দেখা পান।

তিনি বলেন, “আগুন লাগার খবর পেয়েই আমি ছুটে আসি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজ দেখলেও আমার বোনের কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। একের পর এক দেহ বের করে আনা হচ্ছে, জানি না কী আশা করব আমি।” অজয় দক্ষের বোন মোহিনী সিসিটিভি ও ওয়াইফাই রাউটার সংস্থাতেই কাজ করতেন। ওই অফিস থেকেই আগুন ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে।