Parvati Valley: হিমাচলি সংস্কৃতি, পুরাণ কাহিনি আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশেছে হিমালয়ের যে উপত্যকায়…
কাশ্মীর উপত্যকা থেকে শুরু করে হিমালয়ের মাঝে রয়েছে ফুলের উপত্যকা, যার সৌন্দর্য শব্দে ব্যাখ্যা করা কঠিন। এরকম আরেকটি উপত্যকা হল পার্বতী উপত্যকা, যা হিমালয়ের পর্বত দ্বারা বেষ্টিত।
হিমালয়ের (Himalayas) সৌন্দর্যের জন্য বার বার পর্যটকেরা ছুটে যায় এর কোলে। এর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের (Nature) জন্য বিশ্বব্যাপী হিমালয়ের জনপ্রিয়তা। তাছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম পর্বত এই হিমালয়ের কোলে অবস্থিত। আর অবস্থিত একাধিক উপত্যকা (Valley)। কাশ্মীর উপত্যকা থেকে শুরু করে হিমালয়ের মাঝে রয়েছে ফুলের উপত্যকা, যার সৌন্দর্য শব্দে ব্যাখ্যা করা কঠিন। এরকম আরেকটি উপত্যকা হল পার্বতী উপত্যকা (Parvati Valley), যা হিমালয়ের পর্বত দ্বারা বেষ্টিত।
হিমালয়ের অন্যান্য উপত্যকার মতই পার্বতী ভ্যালি এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। এছাড়াও এটি ভ্যালি ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর সঙ্গে সম্পর্কিত। আর তাই এই উপত্যকা জুড়ে রয়েছে নানা গল্প। পার্বতী ভ্যালির ইতিহাস যেমন আকর্ষণীয় তেমনই পুরনো। পাঁচশো-ছয়শো বছর নয়, পার্বতী উপত্যকার ইতিহাস তিন হাজারেরও বেশি পুরনো।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, বিশ্বাস করা হয় যে এই উপত্যকায় বসে প্রায় তিন হাজার বছর ধরে শিব ধ্যান করেছিলেন। শিব এখানে সন্ন্যাসী নাগা সাধু রূপে ধ্যান করতেন। কথিত আছে যে তিনি যখন চোখ খুলে এই উপত্যকার সৌন্দর্য দেখেন, তখন তিনি তাঁর স্ত্রীর নামানুসারে এই জায়গার নামকরণ করেন এবং তখন থেকেই এই উপত্যকা পার্বতী নামে পরিচিত। পৌরাণিক কাহিনি ছাড়াও এখানে রয়েছে আরেকটি আকর্ষণীয় ইতিহাস। যতদূর জানা যায়, এই উপত্যকায় নাকি প্রাচীনকালে গাঁজা বা চরস চাষ করা হত।
View this post on Instagram
হিমাচল প্রদেশের কুল্লু থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই উপত্যকাটি। পাশ দিয়ে বসে চলেছে বিয়াস নদী। বছরের দুটি সময় ভিন্ন রূপ দেখা যায় এই উপত্যকার। পাইন, দেবদারু গাছে ঘেরা এই উপত্যকাটি গ্রীষ্মের সময় ভরে ওঠে সবুজে। আর যখন নভেম্বর মাসের পর শীত পড়তে শুরু করে, সাদা বরফের চাদরে ঢাকা পড়ে যায় পার্বতী।
এই উপত্যকার প্রাকৃতিক দৃশ্য যে কোনও মানুষের মন কাড়তে বাধ্য। তারওপর এই উপত্যকায় রয়েছে কাসোল, মালানা, তোশ, মনিকরন, গ্রহণ, চলোল, খীরগঙ্গা, রাসোল, কুতলার মত একাধিক পর্যটক কেন্দ্র। এই প্রত্যেকটি জায়গা আবার নিজেদের মত করে সুন্দর। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে প্রতিটি গ্রামের কোনও তুলনা হয়নি। এই উপত্যকার প্রতিটি গ্রামই এক একটি অফবিট ডেস্টিনেশন। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ‘ওয়ার্ক ফ্রম ডেস্টিনেশন’-এর ট্রেন্ডের কারণে কাসোল, তোশের মত গ্রামগুলো পরিণত হয়েছে ওয়ার্ক-ডেস্টিনেশনে। তবে মনিকরন ও খীরগঙ্গা এর হিন্দু তীর্থযাত্রীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
পার্বতী উপত্যকার জনপ্রিয়তার পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। তা হল এখানের হিমাচলি সংস্কৃতি। এই জায়গাটি সাইকেডেলিক ট্রান্স উৎসবের জন্য বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ রয়েছে এখানে। বিয়াস নদীতে রিভার রাফটিং থেকে শুরু করে জঙ্গলের মধ্যে ক্যাম্পিং সবই করতে পারবেন পার্বতী উপত্যকার কোলে।
আরও পড়ুন: ভারত-নেপাল সীমান্তে অবস্থিত এই ছোট্ট জনপদ মানস সরোবরের প্রবেশদ্বার! জানুন এই কুমায়নি গ্রামের ইতিহাস