Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Pujoy Pulse: দুর্গাপুজোর ইতিহাসটা জানেন কি?

Pujoy Pulse: প্রজাপতি ব্রহ্মার বরে অজেয় হয়ে উঠেছিল অসুররাজ রম্ভাসুরের পুত্র মহিষাসুর। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন মানুষ থেকে দেবতারাও। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে দেবতারা নিজ নিজ শক্তিকে একত্রিত করে সৃষ্টি করলেন এক অসীম শক্তি ও রূপের আধার, তিনিই দেবী দুর্গা।

Pujoy Pulse: দুর্গাপুজোর ইতিহাসটা জানেন কি?
এক প্রকার বাধ্য হয়ে দেবতারা নিজ নিজ শক্তিকে একত্রিত করে সৃষ্টি করলেন এক অসীম শক্তি ও রূপের আধার, তিনিই দেবী দুর্গাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Oct 11, 2024 | 9:42 PM

প্রজাপতি ব্রহ্মার বরে অজেয় হয়ে উঠেছিল অসুররাজ রম্ভাসুরের পুত্র মহিষাসুর। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন মানুষ থেকে দেবতারাও। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে দেবতারা নিজ নিজ শক্তিকে একত্রিত করে সৃষ্টি করলেন এক অসীম শক্তি ও রূপের আধার, তিনিই দেবী দুর্গা। দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়ে নয় দিনের ভীষণ যুদ্ধের শেষে মহিষাসুরকে পরাজিত করেন দুর্গা। সেই অসুরদলনী রূপেই বাংলায় পূজিতা হন মা দুর্গা।

শাস্ত্র মতে, পিতৃপক্ষের শেষ দিন মহালয়া। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠে ঘুম ভাঙে বাঙালির। পরের দিন অর্থাৎ প্রথমা থেকেই শুরু দেবীপক্ষ। প্রথমাতেই বেজে ওঠে মায়ের আগমনী বার্তা। পঞ্চমীতে অধিবাসের পরই ষষ্ঠীতে বোধনের মাধ্যমে আহ্বান করা হয় দেবী দুর্গার। বোধন বা কল্পারম্ভ মানে উৎসবের শুরু। কল্পারম্ভ হল দেবতাদের ঘুম ভাঙানোর প্রথা। কথায় বলে, দেবতাদের অহরাত্র। অর্থাৎ ছয় মাস দিন এবং ছয় মাস রাত। শাস্ত্র মতে মাঘ থেকে আষাঢ় মাস হল দিন এবং শ্রাবণ থেকে পৌষ মাস হল রাত। অর্থাৎ শরতকাল দেবতাদের জন্য রাত্রিকাল। এই সময় হুট করে বাজনা বাজিয়ে দেবতাদের ঘুম ভাঙালে তাঁরা রুষ্ট হতে পারেন। তাই দীর্ঘ সময় ধরে বোধনের পুজোর মাধ্যমে তাঁদের ঘুম ভাঙানো হয়। সুনির্দিষ্ট লয়ে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয় দেবীকে।

দেবী কোথাও পূজিতা আদিশক্তি মহামায়া মাতৃ রূপে, আবার কোথাও তিনি আরাধিত হন কন্যা রূপে। পঞ্চমীতে বোধনের পরেই মহাষষ্ঠী। এই দিন সন্ধেবেলা বেল বরণের পালা। বেল গাছের তলায় প্রদীপ জ্বালা হয়। এয়ো স্ত্রীয়েরা মাথায় ঘোমটা দিয়ে এসে বরণ করে নেন বাড়ির মেয়েকে।

ষষ্ঠীর রাত শেষ হলেই মহাসপ্তমী। ভোরবেলা পূজাস্থলে পৌঁছেই গঙ্গায় গমন। গণেশের বউ আনতে হবে যে। পুরোহিতমশাই নদীর পারে বসে পুজো করবেন কলা গাছ-সহ নবপত্রিকার। তারপর সেই কলাগাছকে স্নান করিয়ে শাড়ি পরিয়ে নিয়ে আসা হয় মণ্ডপে। গণেশের পাশেই স্থান পায় শাড়ি পরা কলাবউ। ন’টি বিশেষ গাছকে একসঙ্গে স্নান করানো হয় কারণ, মনে করা হয় ওই ৯ গাছ মা দুর্গার ৯ রূপের প্রতীক।

সপ্তমী ফুরোলেই বহু প্রতীক্ষিত মহাঅষ্টমী। প্রিয় মানুষের সঙ্গে শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে অঞ্জলি দেওয়ার পালা। শাস্ত্র মতে এই অষ্টমী এবং নবমী তিথির সন্ধিক্ষণের ৪৮ মিনিটে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন দেবী। তাই এই মাহেন্দ্রক্ষণেই করা হয় সন্ধিপুজো। ১০৮টি প্রদীপ জ্বেলে ১০৮ পদ্ম অর্পণ করা হয় দেবীকে। মনে করা হয়, রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার আগে এই সময়েই আদিশক্তির পুজো করেছিলেন শ্রীরাম চন্দ্রও। দেখা পেয়েছিলেন দেবীর।

এরপর নবমীর পুজো। এই দিন বহু জায়গায় প্রচলিত রয়েছে বলি প্রথার। কোথাও কোথাও রয়েছে পশুবলির প্রথাও। আবার কোথাও রয়েছে শোল মাছ, ফলমূল ইত্যাদি নিয়ে নয় ধরনের বলির প্রথাও।

নবমী মানেই যেন শেষের শুরু। রাত ফুরোলেই বিজয়া দশমী। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে চোখের জলে মাকে বিদায় জানানোর পালা। ঘট বিসর্জনের শেষে সধবা মহিলারা মিলে মেতে ওঠেন সিঁদুরখেলায়। এ হল মাতৃ শক্তির বিজয়ের উদযাপন। তারপর শোভাযাত্রা করে ঢাক বাজিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের পালা। অন্তর ডুকরে আকুতি, আবার এসো মা…

বিসর্জনের শেষে ‘শুভ বিজয়া’ ধ্বনিতে বড়দের প্রণাম-আলিঙ্গন-মিষ্টি মুখে মুখরিত হয় বাঙালি যাপন। আর এরপরই আরও এক বছরের অপেক্ষার পালা শুরু…