Gama Ray Mystery Solved: বিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোর উৎস খুঁজে পেলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা!
নাসার মতে, এই জিআরবি জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটা। ১৯৬০ সালের শেষের দিকে মার্কিন সামরিক স্যাটেলাইট প্রথম এই রশ্মি খুঁজে পেয়েছিল।
আমাদের সাধারণ ধারণায় সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র সূর্য। এবার এই সূর্যের চেয়েও এক মিলিয়ন ট্রিলিয়ন গুণ বেশি উজ্জ্বল কোনও নক্ষত্রের আলো যদি আপনার চোখে এসে পড়ে, কেমন লাগবে? কল্পনা করলেই চোখে অল্প ব্যথা আর মনের মধ্যে অনেকটা বিস্ময় ছড়িয়ে পড়ে, তাই না? কিন্তু, এটা কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব! জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন মহাবিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বল, সবচেয়ে শক্তিশালী আলোর কারণ খুঁজে পেয়েছেন।
নক্ষত্র নির্মাণকারী ছায়াপথগুলিই এই বিশাল আলোর বিস্ফোরণের জন্য দায়ী। এই বিশাল আলোকে মূলত গামা রে বার্স্টস (জিআরবি) নামে চিহ্নিত করা হয়। এই প্রথমবারের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শক্তির এই বিশাল উৎসের কারণ খুঁজে পেয়েছেন। এটি এখন পর্যন্ত কোনও পরিচিত উৎসের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আবিষ্কারটি ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি সহ মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় কিছু রহস্যের উপর আলোকপাত করতে পারে।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে যে এখন পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে ঠিক কী কারণে গামা রশ্মিগুলো তৈরি হয়। মহাবিশ্বের আলোর অন্যতম শক্তির রূপ এই গামা রশ্মি। যা আপাতদৃষ্টিতে খালি আকাশ-এর গায়ে অল্পস্বল্প দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডঃ ম্যাট রথ, যিনি এই গবেষণার প্রধান লেখক, তিনি জানান এই ধরনের আলোর উৎস জানা আমাদের কাছে সবসময় জরুরি। তার কারণ, এই উৎসই আমাদের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।
গামা-রে বিস্ফোরণ কী?
এটি মূলত গামা-রশ্মির স্বল্পস্থায়ী বিস্ফোরণ যা আলোর সবচেয়ে শক্তিশালী একটি রূপ। কয়েক মিলিসেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এটা। এই বিস্ফোরণগুলি একটি সাধারণ সুপারনোভার চেয়ে শতগুণ বেশি উজ্জ্বল হয়। সূর্যের মতো নক্ষত্রের চেয়ে প্রায় এক মিলিয়ন ট্রিলিয়ন গুণ বেশি উজ্জ্বল হয় এই গামা রশ্মি।
নাসার মতে, এই জিআরবি জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটা। ১৯৬০ সালের শেষের দিকে মার্কিন সামরিক স্যাটেলাইট প্রথম এই রশ্মি খুঁজে পেয়েছিল। স্যাটেলাইটে থাকা গামা-রে ডিটেক্টরগুলি সৌরজগতের বাইরে থেকে গামা রশ্মির এই মারাত্মক উজ্জ্বল বিস্ফোরণগুলি তুলে ধরেছিল।
গামা-রে বিস্ফোরণের উৎস চিহ্নিত করা-
প্রাথমিকভাবে, গবেষকরা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলে আসা গ্যাসগুলিকে এই উজ্জ্বল আলোর উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। এই ব্ল্যাক হোলগুলি সমস্ত ছায়াপথের কেন্দ্রে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু, নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি ছায়াপথের ডিস্কগুলিতে নক্ষত্র গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে।
গবেষকরা হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এবং ফার্মি গামা-রে স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া ডেটাগুলি ব্যবহার করেছেন। এর পাশাপাশি তাঁরা ছায়াপথ সম্পর্কিত কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। যার মধ্যে নক্ষত্র গঠনের হার, মোট ভর, ভৌত আকার এবং পৃথিবী থেকে দূরত্ব ইত্যাদির বিশদ বিবরণ রয়েছে।খুব তাড়াতাড়িই একটি মানচিত্র তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে, যা অনুসরণ করে আগে থেকে বলা সম্ভব হবে পরবর্তী গামা রে বিস্ফোরণ মহাকাশের কোন জায়গায় ঘটতে চলেছে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলের বুকে প্রায় আধঘণ্টা ধরে কম্পন! ধরা পড়ল InSight lander- এর সিসমোগ্রাফে
আরও পড়ুন: আজই কি মানবজাতির শেষদিন? পৃথিবীর খুব কাছে চলে এসেছে এই বিশাল গ্রহাণু!