Jalpaiguri: মদ খেয়ে ঘরে হবু জামাই, পণের বাইকের জন্য শ্বশুরবাড়িতে ‘রংবাজি’, বিয়ে ভেঙে দিলেন পাত্রী

West Bengal: জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ঘটনা। চাহিদা মতো পণ দিতে না পারায় বিয়ের আগের দিন শ্বশুর বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ জামাইয়ের বিরুদ্ধে।

Jalpaiguri: মদ খেয়ে ঘরে হবু জামাই, পণের বাইকের জন্য শ্বশুরবাড়িতে 'রংবাজি', বিয়ে ভেঙে দিলেন পাত্রী
বিয়ে ভাঙলেন পাত্রী (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 04, 2022 | 9:27 AM

ময়নাগুড়ি: বিয়ের বাকি ঠিক একদিন। পাত্রীর বাড়িতে তোড়জোড় চলছে। অতিথিরা আসতেও শুরু করে দিয়েছেন। আচার অনুষ্ঠানের জন্য ব্যস্ত সকলে। ঠিক তখনই আচমকা ঘরে প্রবেশ পাত্রের। শরীর থেকে তাঁর তখনও বেরচ্ছে মদের গন্ধ। এরপর হবু শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে রীতিমত তাণ্ডব চালাল হবু জামাই। তার একটাই পণে দিতে হবে নচেৎ বিয়ে নয়। এ দিকে, পাত্রের এহেন মানসিকতা দেখে শেষমেশ বিয়েই ভেঙে দিলেন পাত্রী।

জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ঘটনা। চাহিদা মতো পণ দিতে না পারায় বিয়ের আগের দিন শ্বশুর বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ জামাইয়ের বিরুদ্ধে। পাত্রের এহেন মানসিকতা দেখে বিয়ে ভাঙলেন পাত্রী। সাফ জানিয়ে বলেন, ‘বিয়ের আগেই যদি এরকম চরিত্রের হয় তাহলে বিয়ের পর কী রকম চরিত্র হতে পারে। তাই এই ছেলের সঙ্গে বিয়ে আমি করবো না।’ এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ময়নাগুড়ি ব্লকের মরিচবাড়ি এলাকায়। পাত্রীর এই সিন্ধান্তকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে।

জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের মরিচবাড়ি এলাকার দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে ময়নাগুড়ির পলতাপাড়ার এক যুবকের বিয়ে ঠিক হয়।পাত্রপক্ষ বিয়েতে একটি মোটরসাইকেল এবং নগদ ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু মেয়ের বাবা প্রথমেই বলেছিলেন তিনি দরিদ্র মানুষ। তিনি কোনও মতে ৪০ হাজার টাকা দিতে পারলেও বাইক দিতে পারবেন না। এই অবস্থায় ৩ জুলাই বিয়ের দিন ঠিক হয়।

সেই মতো বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে তোড়জোড় শুরু হয়। মেয়ের বাড়িতে আসতে শুরু করে আত্মীয় স্বজনেরা। ধারদেনা করে ইতিমধ্যেই পাত্রীর বাবা পেন্ডেল সহ ক্যাটারিং এবং বিয়ের মণ্ডপ তৈরি করেন। আর মেয়ের বিয়ে হবে বলে আনন্দে আত্মহারা পাত্রীর পরিবারের লোকজন।

কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত শনিবার গভীর রাতে। অভিযোগ ওই সময় পাত্র-পাত্রীর বাড়িতে এসে বলে আমি এক্ষুনি মেয়েকে নিয়ে যাব। এই বলে বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকী বাড়ির বেশ কয়েকজনকে মারধরও করেন বলে অভিযোগ।

বেগতিক পরিস্থিতি দেখে মেয়ের বাড়ির লোকেরা ময়নাগুড়ি থানার পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে পাত্রকে থানায় নিয়ে যায়। পরে রবিবার পুলিশের মারফৎ ছেলে প্রস্তাব পাঠায় তিনি বিয়ে করবেন। কিন্তু ততক্ষণে মেয়ে বেঁকে বসেছে। সাফ জানিয়ে দেয় সে এই রকম নিম্ন মানসিকতার ছেলের সঙ্গে বিয়ে করবেন না।

পাত্রীর বাবা নৃপেন রায় বলেন, ‘ছেলের দাবি ছিল একটি বাইক ও নগদ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি দরিদ্র মানুষ। তাই আমি বলেছিলাম ৪০ হাজার টাকা দেব কিন্তু বাইক আমি দিতে পারবো না। তারা রাজি হয়ে যাওয়ার পর আমি ধারদেনা করার পাশাপাশি মানুষের কাছে হাত পেতে বিয়ের আয়োজন করেছি। শনিবার রাতে ছেলে এসে বাড়িতে ভাঙচুর চালালো। আমাদের মারলো। মেয়ে এখন আর এমন ছেলেকে বিয়ে করতে চাইছেনা। এত কষ্ট করে সবকিছু করলাম।সব ভন্ডুল হয়ে গেলো। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই।’

পাত্রীর আত্মীয়দের দাবি, ‘আনন্দে করতে এসেছিলাম কিন্তু হল না। এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে হওয়া ঠিক নয়।’

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সবিন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, ‘শনিবার রাতে পাত্র কন্যার বাড়িতে এসে ভাঙচুর মারধর চালায়। তারপর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’ এই বিষয়ে ছেলের বাড়ির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।