Jalpaiguri Road Accident: নামকীর্তন শোনা যাচ্ছিল, তারই মাঝে গাড়ির ভিতর বাউলদের অবস্থা দেখে স্তম্ভিত স্থানীয় বাসিন্দারা
Jalpaiguri Road Accident: বাউল দলের প্রত্যেকেই নদিয়া জেলার বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, তাঁরা কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জে অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছিলেন।
জলপাইগুড়ি: কীর্তনে যাচ্ছিল গোটা টিমটা। ঢোল, করতাল সহযোগে গাড়িতেই নামকীর্তনের আসর জমিয়ে ফেলেছিলেন। চালকও মজে ছিলেন তাতে। আচমকাই টলমল হতে থাকে গাড়ি। কার্যত দিগভ্রষ্ট হতে থাকে গাড়ির অভিমুখ। কীর্তনের দলের সদস্যরা তখন একে অপরের ঘাড়ে পড়ছেন। গাড়ি সজোরে গিয়ে ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে। দুমড়ে মুচড়ে একাকার হয়ে যায় গাড়ির সামনের অংশ। ভিতরে তখন গাড়ির যন্ত্রাংশ দেহ ফুঁড়ে গিয়েছে এক ব্যক্তি। স্টিয়ারিংয়ে আটকে আরেক ব্যক্তির শরীর। বাকিরাও রক্তাক্ত। কারোর মাথা ফেটেছে, কারও মুখ। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার কবলে বাউল দল। ইতিমধ্যেই দু’জনের মৃত্যুর খবর কানে আসছে। আহত হয়েছেন ৬ জন। আহতদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের প্রত্যেককেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এনজিপি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাউল দলের প্রত্যেকেই নদিয়া জেলার বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, তাঁরা কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জে অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছিলেন। রাজগঞ্জের জটিয়াকালি এলাকায় এসে তাঁদের গাড়িটি আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। চালক কোনওভাবেই ব্রেক নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলেন না। সে সময় গাড়িটা গিয়ে ধাক্কা মারে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে।
গাড়ির গতিবেগ বেশি ছিল। সজোরে ধাক্কা লাগায় গাড়ির সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়ির ভিতরের যাত্রীরা, মূলত যাঁরা সামনের দিকে বসে ছিলেন, তাঁদের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। একজনের শরীর ফুঁড়ে যায় গাড়ির ভাঙা যন্ত্রাংশ। গাড়িটির অবস্থা এতটাই মারাত্মক হয়ে যায়, ভিতর থেকে যাত্রীদের বার করে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। পুলিশ এসে গাড়ির সামনের অংশ কেটে কোনওক্রমে যাত্রীদের বার করে। ততক্ষণে মৃত্যু হয় দু’জনের। গাড়িটিকে পরে ক্রেন দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, “গাড়ির ভিতরে যে নামকীর্তন হচ্ছিল, তা আমরা শুনতেই পাচ্ছিলাম। চোখের সামনেই দেখলাম গাড়িটা সজোরে গিয়ে ধাক্কা মারল ট্রাকে। ট্রাকটা দাঁড়িয়ে ছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা তো ভ্যাবাচাকা খেয়ে যাই। এতটাই ভয়ানক পরিস্থিতি হয় গাড়ির, কীভাবে ওঁদের বার করে আনব, বোঝাই যাচ্ছিল না। গাড়ির সামনের অংশ কেটে বার করা হয়।”