Gourbanga University Scam: কেলেঙ্কারি ফাঁস! টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ কৃষ্ণকলির বিরুদ্ধে
Malda: সূত্রের খবর, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই এগারো জনের নিয়োগ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজিকিউটিভ কাউন্সিলের মেম্বার বঙ্গরত্ন শিক্ষাবিদ শক্তি পাত্রকে কোনও নোটিস ছাড়াই সরিয়ে দিয়ে কৃষ্ণকলী বসুকে করা হয়।
মালদা: এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! গৌড়বঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ে কোটি-কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ। পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সেই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এর মধ্যে ১১ জন শিক্ষকের নিয়োগও হয়েছে বলে খবর। আর এই নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের দাবি তুলে জনস্বার্থ মামলা করতে চলেছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে তাঁদের অভিযোগ পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ কৃষ্ণকলি বসু (ঘোষ) এর বিরুদ্ধে।
সূত্রের খবর, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই এগারো জনের নিয়োগ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজিকিউটিভ কাউন্সিলের মেম্বার বঙ্গরত্ন শিক্ষাবিদ শক্তি পাত্রকে কোনও নোটিস ছাড়াই সরিয়ে দিয়ে কৃষ্ণকলী বসুকে করা হয়। যিনি আবার বর্তমানে ওয়েবকুপার রাজ্য সভাপতি। একই সঙ্গে অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বা মদত ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আর্থিক কেলেঙ্কারি হতে পারে না।
একদিকে যখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতি, প্রশ্ন ফাঁস, শিক্ষক নিয়োগ অভিযোগ উঠছে এর মধ্যেই গত ২০২১-এর শুরুতে ১১ জন শিক্ষক নিয়োগ হয় সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। এমনকী, ইসি মেম্বারদের অন্ধকারে রাখা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিয়ে জয়েন করানোর অভিযোগ ওঠে টাকার বিনিময়ে। এই নিয়ে সরব হন বহু অধ্যাপক, শিক্ষা মহল।
জানা গিয়েছে, তৎকালীন জেলাশাসক রাজর্ষী মিত্র সার্বিক বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিলেন। যার জেরে তদন্তও শুরু করা হয়। পরবর্তীতে জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এই প্রসঙ্গে ভিসি শান্তি ছেত্রীকেও নির্দেশ দেন তদন্তের জন্যে। তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরুও হয়। কিন্তু তা আবার ধামাচাপাও পড়ে যায়।
এরপর পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই নতুন করে এই বিষয় নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা জুড়েই। অভিযোগ, নিয়োগের সময় মোটা টাকার লেনদেনের বাইরে ১১ জনের চাকরি নিশ্চিত করতে ৬২ লক্ষ টাকার ফের লেনদেন হয়। সেই লেনদেনের মধ্যে সংযোগকারী হিসেবে একজন অধ্যাপকের নাম উঠে এসেছে। যিনি আবার একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত কন্ট্রোলার ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও আগে অন্যান্য কেলেঙ্কারির জন্যে তদন্ত হয়েছে। তাঁকে কাগজে কলমে সাসপেন্ড করা হলেও তিনি বহাল তবিয়তেই রয়েছেন।
অন্যদিকে, এই বিষয়ে তৃণমূলের একটা বড় অংশ প্রকাশ্যে সেভাবে মুখ খুলতে না চাইলেও অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে ক্ষুব্ধও রয়েছেন তাঁরা। ক্ষুব্ধ অধিকাংশ অধ্যাপক। মন্তব্য করবেন না বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন ভিসি। তবে তাঁর কথায়, ইডি হোক বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় স্বংস্থা, তাঁদের মুখোমুখি হওয়ার জন্যে তিনি প্রস্তুত। সব মিলিয়ে গোটা কেলেঙ্কারি নিয়ে তিনিও যে চুড়ান্ত ক্ষুব্ধ তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট।
এই বিষয়ে শক্তি পাত্র বলেন, ‘প্রথম দিকে যে নিয়োগ হয়েছে তা জানতাম না। কারণ ইসির মিটিং হয়নি। আমি জানতে পেরেছি তখন যখন রেজিস্ট্রারের যখন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় সেই সময় মিটিং করা হয়। আমি প্রতিবাদ করি। তারপর ডিএম ফোন করেন। আমি ক্যান্সেল করতে বলছি ইন্টারভিউর। কিন্তু তারপরও অ্যাপয়েন্টেট হলেন। কীভাবে হলেন জানি না।’ অন্যদিকে কৃষ্ণকলী বসু বলেন, “যখন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে তখন চঞ্চল চৌধুরী উপাচার্য ছিলেন। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কোনও সম্পর্ক আমার ছিল না। তদন্ত হলে তা বের হবে। যদিও তখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী। তিনি একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করেছিলেন। উচ্চ শিক্ষা দফতরের নজরদারিতেই এই তদন্ত কমিটি তৈরি হয়। তদন্ত কমিটিই নিয়োগ বন্ধ করতে বলে। আমরা সবটাই বাইরে থেকে দেখেছি। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসিতে এসেছি ২০২২ সালের জুলাই মাসে।”