AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bangladesh: মনে ছিল কেবল মা-বাবা ও গ্রামের নাম, ৭০ বছর পর সোশ্যাল মিডিয়াই মিলিয়ে দিল হারানো মা-ছেলেকে

Man Found his mother after 70 year via Social Media: আব্দুল কুদ্দুস জানান, ১৯৩৯ সালে ব্রাহ্মণবেড়িয়া গ্রামেই তাঁর জন্ম হয়েছিল। মাত্র ১০ বছর বয়সে তাঁকে কাকার বাড়িতে থাকার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে মন না লাগায়, কাকার বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি।

Bangladesh: মনে ছিল কেবল মা-বাবা ও গ্রামের নাম, ৭০ বছর পর সোশ্যাল মিডিয়াই মিলিয়ে দিল হারানো মা-ছেলেকে
৭০ বছর পর সাক্ষাতের সময় আবেগঘন মা-ছেলে। ছবি: টুইটার
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2021 | 4:06 PM
Share

ঢাকা: সোশ্যাল মিডিয়া(Social Media)-র সবটাই কি খারাপ? হাজারো কটুক্তি, দেখনদারি, হিংসা বা প্রচারের মাঝে জায়গা পায় ভাল কিছু বিষয়ও। আর সেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই অশতীপর বৃদ্ধ খুঁজে পেলেন তাঁর মাকে। প্রায় ৭০ বছর পর নিজের মায়ের কোলে ঠাঁই পেলেন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই।

বাংলাদেশ(Bangladesh)-র আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি মাত্র ১০ বছর বয়সেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন  হয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় গোটা জীবন অতিবাহিত হয়ে গেলেও পরিবারের কথা ভোলেননি তবুও। সুযোগ পেলেই কাউকে জিজ্ঞাসা করতেন, তাঁর পরিবার, মা-বাবা সম্পর্কে খবর জোগাড় করা সম্ভব কিনা।

৮২ বছরের বৃদ্ধ কুদ্দুসের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার এই তীব্র ইচ্ছা দেখেই সম্প্রতি এক ব্যবসায়ী সোশ্যাল মি়ডিয়ায় একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেছিলেন। গ্রামের এক বাসিন্দার চোখে পড়ে সেই ভিডিয়ো। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন কুদ্দুসের মা মঙ্গলা নেস্যাকে, যার বয়স প্রায় ১০০ ছুঁইছুঁই।

৭০ বছর পর মায়ের খোঁজ পেয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি ৮২ বছরের ওই বৃদ্ধ। গত সপ্তাহেই তিনি নিজের সন্তানদের নিয়ে ৩৫০ কিলোমিটার পাড়়ি দিয়ে রাজশাহী থেকে ব্রাহ্মণবেড়িয়া গ্রামে পৌঁছে যান। ৭০ বছরের অপেক্ষার পর মাকে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি আব্দিল কুদ্দুস। হাতের কাটা দাগ দেখে ১০ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকেও চিনতে পারেন শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধা।

আব্দুল কুদ্দুস জানান, ১৯৩৯ সালে ব্রাহ্মণবেড়িয়া গ্রামেই তাঁর জন্ম হয়েছিল। মাত্র ১০ বছর বয়সে তাঁকে কাকার বাড়িতে থাকার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে বেশিদিন মন না লাগায়, কাকার বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে দুই দিদির কাছে আশ্রয় পান এবং তাদের কাছেই বড় হয়ে ওঠেন।

কৈশোর পেরিয়ে যৌবন ও পরে বার্ধক্যে পা দিলেও মায়ের কথা ভুলতে পারেননি তিনি। তবে এত বছর পুরনো ঘটনা হওয়ায় কেবল মা-বাবার ও গ্রামের নামই মনে ছিল তাঁর। চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই এক ব্য়বসায়ীর সঙ্গে গল্প করতে করতে পরিবারের কথা ওঠে, তখনই হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। এরপরই ওই ব্যবসায়ী যাবতীয় তথ্য সহ একটি ভিডিয়ো বানিয়ে সেটা সোশ্যাল মাধ্যমে আপলোড করেন।

সম্প্রতিই তাঁর এক দুসম্পর্কের আত্মীয়ের চোখে পড়ে ওই ভিডিয়ো। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মা মঙ্গলা নেস্যাকে তিনি খবর দেন। ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ের বাবা কুদ্দুসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেই তিনি আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েন। গত সপ্তাহেই ৩৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছুটে আসেন ব্রাহ্মণবেড়িয়া গ্রামে। সেখানেই খুঁজে পান ৭০ বছর আগে হারানো মা ও বোনকে।

৭০ বছর পর মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর কুদ্দুস বলেন, “আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে এবং তিনি সঠিকভাবে কথা বলতেও পারেন না। কিন্তু আমায় দেখেই হাত ধরে তিনি কাঁদতে শুরু করেন। আমিও মাকে আশ্বস্ত করে বলেছি যে তোমার ছেলে ফিরে এসেছে, আর কোনও চিন্তা করতে হবে না তোমাকে।” ৭০ বছর বাদে মা-ছেলের পুনর্মিলন দেখতে ভিড় জমান গ্রামের কয়েকশো মানুষও।