Russia warns Finland: এবার কি যুদ্ধ ফিনল্যান্ডে? ন্যাটোয় যোগ দিতে চাইতেই কড়া হুঁশিয়ারি মস্কোর

Russia warns Finland: ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষিতে ন্য়াটোয় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ফিনল্যান্ড। এরপরই এল রাশিয়ার কড়া হুঁশিয়ারি।

Russia warns Finland: এবার কি যুদ্ধ ফিনল্যান্ডে? ন্যাটোয় যোগ দিতে চাইতেই কড়া হুঁশিয়ারি মস্কোর
পুতিনকে আয়নায় মুখ দেখতে বললেন ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2022 | 1:04 PM

হেলসিঙ্কি: ইউক্রেনের পর এবার কি রুশ বাহিনী (Russia Ukraine Conflict) অভিযান চালাবে আরেক প্রতিবেশী দেশ ফিনল্যান্ডেও? ঠান্ডা যুদ্ধের পুরো সময়টা নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখলেও, বৃহস্পতিবার ন্য়াটো সামরিক জোটে (Finland to join NATO) যোগ দেওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশ। ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘অবিলম্বে ফিনল্যান্ডের ন্যাটো বাহিনীতে যোগ দেওয়া উচিত’। ন্য়াটো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ফিনল্যান্ডের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হলেও, পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য হুমকির দাবি করে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ফিনল্যান্ডকে এর ‘পরিণতি’ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। মজার বিষয়, ফিনল্যান্ডের হঠাৎ নীতি বদলের সিদ্ধান্তের কারণ হিসাবে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের কথাই বলা হয়েছে।

প্রায় গোটা বিশ্বের নিন্দার মুখেও ইউক্রেনে তাদের সামরিক অভিযানকে বরাবর ন্যায়সঙ্গত বলেই দাবি করে এসেছে ক্রেমলিন। ‘ইউক্রেনকে নাৎসি মুক্ত করা’র পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণ ঠেকানোও তাদের লক্ষ্য, হামলার পিছনে এই যুক্তিই দিয়েছিল রাশিয়া। অদ্ভূতভাবে, ফিনিশ প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তো ন্যাটো বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেই দায়ী করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনিই এটা ঘটিয়েছেন, আয়নার দিকে তাকান’। প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেন, ‘অবিলম্বে ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে ফিনল্যান্ডকে। আশা করি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দ্রুত এই বিষয়ে বেশ কিছু জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে’। জানা গিয়েছে, আগামী সোমবার ফিনিশ পার্লামেন্টে এই ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক হবে। অধিকাংশ সাংসদই ইতিমধ্য়েই এই বিষয়ে তাদের সমর্থন থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের। এর আগে ১৯৩৯ এবং ১৯৪৪ – দুবার রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধেও লিপ্ত হয়েছিল হেলসিঙ্কি। পরে শান্তি চুক্তি হলেও, সেই দুই যুদ্ধে ফিনল্যান্ডের অন্তত ১০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছিল ক্রেমলিন। কাজেই রুশ আগ্রাসনের অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে ফিনল্যান্ডের। এই অবস্থায় ২০১৪ সালে মস্কো, ইউক্রেনের হাত থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেওয়ার পর থেকেই ন্যাটোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করেছিল ফিনল্যান্ডের। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান, হেলসিঙ্কির কপালের ভাঁজ আরও বাড়িয়েছে। আর এই হামলাই তাদের ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দিকে কয়েক কদম এগিয়ে দিয়েছে, এমনটাই বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। শুধু রাজনৈতিক নেতাদেরই নয়, গত কয়েকদিনে ফিনল্যান্ডের সাধারণ মানুষেরও সামরিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা নিয়ে মনোভাবের বদল ঘটেছে। ক্রমেই ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে জনমত বাড়ছে।

স্বাভাবিকভাবেই ফিনল্যান্ডের এই সিদ্ধান্তে চটেছে রাশিয়া। ন্যাটো’তে ফিনল্যান্ডের যোগ দেওয়া তাঁদের জন্য় অবশ্যই হুমকির, এমনটাই জানিয়েছে মস্কো। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘ন্যাটোর সম্প্রসারণ আমাদের মহাদেশকে আরও স্থিতিশীল ও নিরাপদ করবে, এটা ভুল ভাবনা। প্রত্যেকেই রাশইয়া এবং ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ এড়াতে চান। তবে, ইউক্রেনে রুশ অভিযান ভেস্তে দিতে যারা চাইবে, তাদের উপযুক্ত জবাব দিতে তৈরি মস্কো।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ‘জবাব’ নির্ভর করবে, ঠিক কীভাবে ন্যাটো তাদের শক্তি সম্প্রসারণ করতে চাইছে তার উপর। রুশ সীমান্তের কতটা কাছে তারা সামরিক পরিকাঠামো স্থাপন করছে, তার উপর। তবে শুধু ফিনল্যান্ডই নয়, বড় অদলবদল না হলে, ইউক্রেনে হামলার পর আরেক রুশ প্রতিবেশী দেশ সুইডেনও ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আবেদন করতে চলেছে।

ফিনল্যান্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ন্যাটো। ন্য়াটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ফিনল্যান্ডকে ন্যাটো বাহিনীতে ‘উষ্ণভাবে স্বাগত জানানো হবে’। তাদের যোগদান প্রক্রিয়া হবে ‘মসৃণ এবং দ্রুত’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ফিনল্যান্ডর এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, ‘আমরা ফিনল্যান্ড বা সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের আবেদনকে সমর্থন করব।’ তবে, এই মুহূর্তের সবথেকে বড় প্রশ্ন হল, ইউক্রেনের পর কি এবার রুশ বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হবে ফিনল্যান্ডেও? যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন থেকে সরে যাবে ফিনল্যান্ডে? সময়ই এর জবাব দিতে পারে।