নয়া দিল্লি: শেষ পর্যন্ত বড় বিপদ কিছু ঘটেনি। কিন্তু, ঘটতেই পারত। ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদ ভবনে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। বুধবার, আরও এক ১৩ ডিসেম্বর ফের আতঙ্ক ছড়ালো সংসদের অন্দরে। লোকসভায় হলুদ ধোঁয়া নিয়ে দাপিয়ে বেড়াল দুই বিক্ষোভকারী। মুহূর্তে হামলার আতঙ্কে বাইরে বের হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল সাংসদদের মধ্যে। দৃশ্যতই আতঙ্ক ধরা পড়েছে তাঁদের চোখেমুখে।
একেবারে শুরুর দিকে লোকসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। তিনি জানান, “কিছু লোক গ্যালারি থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমার সামনেই। তার ওরা সামনের দিকে ছুটে গিয়েছিল। ওরা কিছু একটা গ্যাস ছুড়েছে।” তখনও কাকলি বা অন্য কোনও সাংসদ জানতেন না, লোকসভায় ঢুকে পড়া ওই ব্যক্তিরা জঙ্গি না অন্য কেউ। অবশ্য পুরো বিষয়টি জানার পরও, নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। লোকসভার ভিতর এমন ঘটতে পারে ভাবাই যায় না। ওরা হঠাৎ করে এগিয়ে যাচ্ছিল। আর ধোঁয়া বের হতে শুরু করেছিল। আমি তো ভয় পাচ্ছিলাম, ওরা হয়তো কোনও বিস্ফোরণ ঘটাবে বা গুলি ছুড়বে। তারা কীভাবে ওইসব নিয়ে সংসদের মধ্যে ঢুকে পড়ল, এটা দেখতে হবে।”
হামলা যখন হয়, সেই সময় বক্তব্য রাখছিলেন খগেন মুর্মু। তিনি বলেছেন, “জিরো আওয়ারে আমার বক্তব্য ছিল। মালদায় বিমানবন্দর তৈরির দাবি নিয়ে আমি বলতে শুরু করেছিলাম। হঠাৎ শুনি, আমার ডানদিকে কিছু আওয়াজ হচ্ছে। আমি প্রথমে সেদিকে মন দিইনি। তারপর দেখি, উপর থেকে একজন লাফিয়ে পড়ছেন। তারপর তো সাংসদরাই সকলে মিলে তাদের ধরে নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে তুলে দেয়। ওদের হাতে ধোয়া বের হওয়ার একটা জিনিস ছিল।”
বঙ্গ বিজেপির দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত দিলীপ ঘোষ। কিন্তু, আচতমকা এক ব্যক্তিকে গ্যালারি থেকে লাফ মেরে পড়তে দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনিও। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “লোকসভা চলছিল। অধ্যক্ষের চেয়ারের সামনেই গ্যালারি থেকে একজন প্রথমে ঝাঁপ দেয়। আমি তো ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম কেউ পড়ে গেল বোধহয়। তারপর দেখি আর একজন ঝাঁপ দিল। মনে হয় দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এটা করেছে। এই ধরনের জিনিস নিয়ে কীকরে ভিতরে ঢুকে পড়ল, এটা চিন্তার বিষয়।”