Bhitarkanika: ঘুরে আসুন ভারতের ‘মিনি অ্যামাজন’ থেকে! পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল ওড়িশার ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান
চলতি বছরের করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় উদ্যানটি। ৩১ জুলাই তা পুনরায় খোলার কথাও ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় পর্যটকদের জন্য বন্ধই ছিল ভিতরকণিকা।
ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান, যা ভারতের মিনি অ্যামাজন হিসাবেও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এখন এই জাতীয় উদ্যানকে খুলে দেওয়া হল বন্যপ্রাণী প্রেমী এবং পর্যটকদের জন্য। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলায় অবস্থিত এই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি।
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের পরে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য হিসাবে পরিচিত ভিতরকণিকা। ওড়িশার চাঁদিপুর ও পারাদ্বীপের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ভিতরকণিকা। ব্রাহ্মণী এবং বৈতরণী নদীর মধ্যিখানের বদ্বীপ দ্বারা গঠিত এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যটি। ৬৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই ম্যানগ্রোভটি।
চলতি বছরের করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় উদ্যানটি। ৩১ জুলাই তা পুনরায় খোলার কথাও ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় পর্যটকদের জন্য বন্ধই ছিল ভিতরকণিকা। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল হয়েছে। তার ওপর এখন নোনা জলের কুমিরদের সঙ্গমের সময়। এই কথা মাথায় রেখেই পর্যটনদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হল মিনি অ্যামাজন।
অনেকেই হয়তো জানেন না, কিন্তু এই জাতীয় উদ্যানটি বিশ্বের বৃহত্তম সাদা কুমিরদের বাসস্থান। এখানে নোনা জলের কুমিরদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এবং প্রতি বছর এই শীতের মরসুমেই এই কুমিরের প্রজনন প্রক্রিয়া চলে এবং জন্ম নেয় আরও হাজার হাজার কুমির। ভারতের ৭০ শতাংশ নোনা জলের কুমির এই জাতীয় উদ্যানেই পাওয়া যায়।
১৯৭৫ সালে এই অভয়ারণ্যটিতে শুরু হয় কুমির সংরক্ষণ। তবে তার আগে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত এই জায়গাটি ছিল জমিদারদের মালিকানাধীন। ওড়িশা থেকে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলটিও ওড়িশা সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৯৭৫ সালে এই ভিতরকণিকা ম্যানগ্রোভকে অভয়ারণ্য বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর এই অরণ্যের ১৪৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে জতীয় উদ্যান বলে ঘোষণা করে সরকার। তারপরেই ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক গুরুত্বের নিরিখে রামসার জলাভূমি হিসেবে মনোনিত হয় এই ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান।
বর্তমানে উদ্যানটি পর্যটকদের জন্য খোলা রয়েছে, তবে মেনে চলতে হবে কোভিড ভিধি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা থেকে শুরু করে সব সময় মাস্ক পড়ে থাকতে হবে এখানে। বন বিভাগের সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুযায়ী, একটি স্থানীয় গাইড উদ্যানের ভিতরে বাধ্যতামূলকভাবে দর্শনার্থীদের সঙ্গে যাবে। এর জন্য বন বিভাগ আশেপাশের গ্রাম থেকে প্রায় ৪০ জন তরুণকে স্থানীয় গাইড হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বন বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মী এখানে মোতায়েন করা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
আরও পড়ুন: তিব্বতের সংস্কৃতির সাক্ষী হতে চান? ট্রেক করে আসুন নেপালের লো মানথাং থেকে
আরও পড়ুন: শুধু ভারতে নয়, এই একই নামের শহর রয়েছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও