Jangal Mahal: বার বার শাসক দলের বিরুদ্ধে মাওবাদী পোস্টার, তাই কি আতঙ্কিত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা?
High Alert in Jangal Mahal: তৃণমূল নেতারা তো কিছুদিন আগে পর্যন্তও একাধিকবার দাবি করে এসেছেন, জঙ্গলমহলে মাওবাদী বলে কিছু নেই। তাহলে কেন এই ভয়ের বাতাবরণ?
ঝাড়গ্রাম : কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তরফে রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে, জঙ্গলমহলে (Jangal Mahal) বড়সড় কিছু ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তারপর থেকে অতন্দ্র রাজ্য পুলিশ। ১৫ দিনের হাই এলার্ট জারি করা হয়েছে জঙ্গলমহলের সব থানা এলাকাগুলিতে। বাতিল করা হয়েছে সব পুলিশকর্মীর ছুটি। এমনকী যাঁরা ছুটিতে ছিলেন, তাঁদেরও কাজে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য নিজে জঙ্গলমহলের জেলাগুলি ঘুরে গিয়েছেন। বৈঠক করেছেন জেলার পুলিশকর্তাদের সঙ্গে। কিছুদিন আগেই (৮ এপ্রিল) মাওবাদীরা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল। সেই বনধে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল জঙ্গলমহলে। রাস্তাঘাট কার্যত শুনশান। গাড়ি ঘোড়ার দেখা সেভাবে মেলেনি। দোকানপাট বন্ধ। অতীতের সেই চেনা আতঙ্ক যেন আবার ফিরে এসেছে জঙ্গলমহলে। ওই দিনের বনধের পর থেকেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় অপারেশন শুরু করে যৌথ বাহিনী। শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি এলাকায়, বিশেষ করে ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামগুলিতে মাওবাদীরা রাতের অন্ধকারে আনাগোনা শুরু করেছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এলাকায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে একটি আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। পুলিশও রাজনৈতিক নেতাদের সন্ধে ৬ টার মধ্যে বাড়ি ফেরার পরামর্শ দিয়েছে। সন্ধের পর কোনও রাজনৈতিক সভা বা কর্মসূচি আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশের তরফে এমন নির্দেশের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলার সভাপতি তথা বিনপুরের বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদাও।
বিধায়ক জানিয়েছেন, “আমরা সমস্ত নেতা ও কর্মীকে সজাগ করে দিয়েছি । নিজেরাও সতর্ক রয়েছি। এই বিষয়ে পুলিশ তার ব্যবস্থা নেবে। মাওবাদীরা শান্ত জঙ্গলকে ফের অশান্ত করার চেষ্টা করলে জঙ্গলমহলের মানুষ তার যোগ্য জবাব দেবে।” কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে জঙ্গলমহল এলাকার তৃণমূল নেতাদের যেন একটা মাওবাদী আতঙ্ক গ্রাস করছে। কিন্তু কেন এই আতঙ্ক? তৃণমূল নেতারা তো কিছুদিন আগে পর্যন্তও একাধিকবার দাবি করে এসেছেন, জঙ্গলমহলে মাওবাদী বলে কিছু নেই। তাহলে কেন এই ভয়ের বাতাবরণ? কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, অতীতে দেখা গিয়েছে জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা কী ধরনের নাশকতা বা অত্যাচার চালিয়েছে তৎকালীন সরকার সিপিএম নেতা ও কর্মীদের ওপর। আবার সাম্প্রতিককালে রাজ্যের শাসক দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধেও বার বার পোস্টার পড়তে দেখা গিয়েছে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায়। সেই কারণেই কি তাহলে আতঙ্ক বেড়েছে তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।
তার উপর পুলিশের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, জঙ্গলমহল এলাকার যে সব তৃণমূল নেতা ও কর্মী নিরাপত্তা বা দেহরক্ষী পান, তাঁরা যেন কোনও জায়গায় অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে অবশ্যই প্রশাসনকে অবগত করেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের না জানিয়ে তাঁদের দেহরক্ষীরা যেন কোনওভাবেই ছুটি না নেন। পুলিশের তরফে এমন নির্দেশিকাতে আরও আতঙ্ক বেড়েছে জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতাদের।