MD Selim: ‘দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে বাম আমল নিয়ে টানাটানি’, তৃণমূলকে তোপ সেলিমের
১৯৯৭ সাল থেকে প্রাপ্ত চাকরির তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়ে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের যার তীব্র সমালোচনা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
হলদিয়া: নিয়োগ দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা। দুর্নীতির পাঁকে পড়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। দুর্নীতিতে জড়িত একের পর এক তৃণমূল নেতার নাম সামনে আসছে। কোটি কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ উঠছে। আর এর মধ্যেই বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে মুখ খোলেন তৃণমূল দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। চিরকুট প্রসঙ্গ তুলে অতীতের ‘চ্যাপ্টার ওপেনের’ নির্দেশও দিয়েছেন। তার ২ দিন আগে বাম আমলে ‘চিরকুট’ দিয়ে চাকরি হয়েছে এ দাবি করে সরকারের তরফে শ্বেতপত্র প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ বিষয়ে শিক্ষা সেল ও দফতরকে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রাপ্ত চাকরির তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়ে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের যার তীব্র সমালোচনা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। পঞ্চায়েত ও হলদিয়া পুরসভার নির্বাচনে দলের রণকৌশল ঠিক করতে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-নেত্রীদের নিয়ে রবিবার তমলুক ও হলদিয়াতে জোড়া অভ্যন্তরীন বৈঠক করেন সেলিম- সহ দলের অন্যান্য রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। সেখানেই তিনি তৃণমূলের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
হলদিয়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চিরকুট প্রসঙ্গে মুখ খোলেন সেলিম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, “মমতা ব্যানার্জি, ব্রাত্য বসু, পার্থ চ্যাটার্জিরা শিক্ষা সংস্থাগুলিকে এমন করেছে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি কোন পর্যায়ে গেছে বোঝা যাচ্ছে। এই যে লুঠের রাজত্ব, সাম্রাজ্য এটা সর্বগ্রাসী। আর তাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এখন বলছে বাম আমলে কোথায় চিরকুটে চাকরি হয়েছিল খুঁজে বের করবে।” বর্তমান সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি রয়েছে- এ দাবি করে সেলিম আরও বলেন, “এখনও পর্যন্ত যে কটা পরীক্ষা করেছে তার ওএমআর শিটগুলি কোথায় গেলো, কারা নষ্ট করল তা কেউ স্বীকার করছে না কেন? প্রতিদিন যখন ইডি সিবিআই ডাকছে, আদালত যখন গালাগাল করছে তারপরও কি তৃণমূলের একটাও নেতা মন্ত্রী বলছে অন্যায় হয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী কি বলেছে ভুল হয়েছে, ভবিষ্যতে করব না? বলতে পারবে না। কারণ, দুর্নীতি করবে না অথচ তৃণমূল থাকবে এটা হতে পারে না।” সেলিম আরও বলেন, “পুরসভা, পঞ্চায়েতগুলিতেও দুর্নীতি রয়েছে। সে জন্য ভোট লুট করতে হয়েছিল। গত ১১ বছর ধরে তৃণমূল টাকা-পয়সা লেনদেন, জমি-জায়গা লেনদেন, খুনোখুনি, লুঠতরাজ ছাড়া অন্য কিছু করেনি।”
এদিন নিমতৌড়ির কুলবেড়িয়া দলীয় কার্যালয়ে এবং হলদিয়ার শ্রমিক ভবনে অনুষ্ঠিত হয় সভা দুটি। সেলিম ছাড়াও সভাগুলিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতা অনাদি সাহু, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, ইব্রাহিম আলি, পরিতোষ পট্টনায়ক প্রমুখ।
সেলিমের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা শিবনাথ সরকার বলেছেন, “যাঁরা দুর্নীতি করেছেন দল তাঁদেরকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। আইনি পথে তদন্ত হচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তাই মহম্মদ সেলিমের এ সব কথা বলার কোনও অধিকারই নেই। বাম আমলে বিভিন্ন কারখানায় কী ভাবে নিয়োগ হয়েছে, সে গুলো আমরা জানি।”