কলম্বো: আর্থিক সঙ্কট, বিক্ষোভ ঘিরে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার এবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হল। শুক্রবারই সরকারের তরফে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ দেখানোর পরই সরকারের তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত এক সপ্তাহ ধরেই কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছে শ্রীলঙ্কা। একদিকে দেশে জ্বালানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে, একইসঙ্গে খাদ্য ও অর্থসঙ্কটও দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিই আরও জটিল হয়ে উঠল জরুরি অবস্থার ঘোষণায়।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ ও অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে গতকালই কমপক্ষে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা করেন। এরফলে দেশের সামরিক বাহিনীকে বিনা বিচারপ্রক্রিয়াতেই কাউকে গ্রেফতার ও দীর্ঘ সময় বন্দি করে রাখার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভের রূপ দেখেই প্রেসিডেন্ট আন্দাজ করেছেন আগামিদিনে এই ক্ষোভ আরও বাড়তে চলেছে। সেই কারণেই তিনি জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছেন বলে মত কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের। যদিও প্রেসিডেন্ট বিবৃতি জারি করে বলেছেন, “জনসাধারণের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং স্বাভাবিক জীবনের জন্য অপরিহার্য সরবরাহ ও পরিষেবাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করার স্বার্থেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে।”
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের হাত থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পরই এই প্রথম চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ২.২ কোটি জনসংখ্যার দেশে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের চরম সঙ্কট দেখা গিয়েছে। হু হু করে বাড়ছে জ্বালানির দাম। ইতিমধ্যেই ডিজেলের ভাণ্ডার শেষ হয়ে গিয়েছে, শেষের পথে পেট্রোলও। চরম বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে দিনের প্রায় ১০ ঘণ্টাই লোডশেডিং করে রাখা হচ্ছে।
পুলিশের তরফে শুক্রবার রাত থেকে দেশের পশ্চিমভাগে কার্ফু জারি করা হয়েছে। কলম্বো সহ আশেপাশের অঞ্চলে ‘নো-গো জ়োন’ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, শুক্রবার বিকেলেই ফের রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা। হাতে তেলের ল্যাম্প ও পোস্টার নিয়ে তারা প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের ইস্তফা দাবি করেন।