নজরে ডেবরা: লড়াই হবে দুই প্রাক্তন আইপিএস অফিসারের
বিজেপির হয়ে প্রার্থী হলেও একসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন ভারতী ঘোষ। মমতাকে 'মা' বলেও ডাকতেন তিনি।
কলকাতা: এবার বিধানসভা নির্বাচন আগের থেকে অনেক ক্ষেত্রেই আলাদা। ২০১৬-তে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপি (BJP) ততটাও প্রকট হয়নি। তবে মাঝে আরও একটা লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Eelection) বাংলার রাজনীতির ছবিটা বদলেছে। তাই এবার প্রার্থী তালিকা বাছাইয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলই। একদিকে যেমন তারকা প্রার্থী দিয়ে চমক তৈরির চেষ্টা করেছে তৃণমূল, অন্যদিকে তালিকায় রয়েছে পোড় খাওয়া রাজনীতিক থেকে দুঁদে প্রাক্তন অফিসার। সদ্য প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় তাই চোখ টেনেছে ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্র। সেখানে লড়াই হবে দুই প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের।
একজন, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে আগে থেকেই দাবি করেছিল গেরুয়া শিবির। অবশেষে আইপিএস অফিসার পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগ দান। অন্যজন আজ বিজেপি নেত্রী হিসেবে পরিচিত হলেও একসময় শাসক দলের ঠিক কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তা অনেকেরই জানা। প্রথম জন হুমায়ুন কবীর আর দ্বিতীয় জন ভারতী ঘোষ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা বলে ডাকতেন যে ভারতী, তাঁর বিজেপিতে যোগদান অনেকটাই চমকপ্রদ ছিল। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুর তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। যদিও লোকসভায় প্রার্থী হলেও জয়ী হননি তিনি। এবারও সেই মেদিনীপুরের ডেবরায় ভারতীকেই ভোট ময়দানে নামিয়েছে বিজেপি।
আর সেই কেন্দ্রেই তৃণমূলের তাস হুমায়ুন কবির। যদিও এটা প্রত্যাশিতই ছিল। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন তিনি। গত মাসে সেই পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যোগ দেন তৃণমূলে। তার আগে থেকেই তাঁর তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল রাজনৈতিক মহলে। চন্দননগরে শুভেন্দু অধিকারীর একটি মিছিল ঘিরে বিতর্কে উঠে আসে তাঁর নাম। অভিযোগ, ওই স্লোগানে উঠেছিল গোলি মারো স্লোগান। সেই মিছিল থেকে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করান এই আইপিএস। এছাড়া, তেলেনিপাড়ায় হিংসার ঘটনায় অর্জুন সিং, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের ঢুকতে দেননি হুমায়ুন কবির।
২০০৩ ব্যাচের আইপিএস অফিসার হুমায়ুন কবীর। দুষ্কৃতী দমনের পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাতেও বেশ পারদর্শী ছিলেন তিনি। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থেকে হাতকাটা দিলীপকে গ্রেফতার করে লাইমলাইটে এসেছিলেন হুমায়ুন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যেরও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন হুমায়ুন। তবে মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার থাকার সময়ে একটি ধর্ষণের মামলা নিয়ে বিতর্কে জড়ান হুমায়ুন। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে বদলি করা হয় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি পদে। সেখানে বেশ কয়েকদিন কাটিয়ে কলকাতা পুলিসে যুগ্ম কমিশনার পদে যোগ দেন তিনি। এরপর চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন।